ভয়াবহ তুষার ঝড়ের কবলে পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ইতোমধ্যেই ৩৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিদ্যু‍ৎহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে প্রায় ১৫ লাখ পরিবার। বড় দিনের আমেজে প্রচুর পর্যটক ভিড় জমিয়েছিলেন আমেরিকায়। এই তুষার ঝড়ের কারণে আপাতত সেখানেই আটকে পড়েছেন তারা। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র তুষারঝড়, তাপমাত্রা মাইনাস ৫১ ডিগ্রি

দেশটির আবহাওয়া দফতর জানায়, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪৮ ডিগ্রি নিচে চলে গিয়েছে। প্রবল শীতের কারণে নিমেষেই বরফে পরিণত হচ্ছে ফুটন্ত পানি।

ঝড়ের পরিধি কানাডার গ্রেট লেক থেকে শুরু করে মেক্সিকো সীমান্তে রিও গ্রান্ডে পর্যন্ত বিস্তৃত। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার প্রায় ৬০% শীতকালীন আবহাওয়ার বিষয়ে সতর্কতার পরামর্শ পেয়েছিল। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস বলেছে, রকি পর্বতমালার পূর্ব থেকে আপালেশিয়ানে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত অনেক নিচে নেমে যায়।

শীতকালীন ঝড়ে লন্ডভন্ড যুক্তরাষ্ট্র, ৪৪০০ ফ্লাইট বাতিল

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, একটি সাইক্লোন- শক্তিশালী ঝড়ে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ খুব দ্রুত হ্রাস পেয়ে গ্রেট লেকের কাছে ভারী বাতাস এবং তুষারসহ ঝড়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ঝড়টি তার সর্বশক্তি নিয়ে বাফেলোতে আঘাত হানে। হারিকেনের তীব্র বাতাস এবং তুষারপাতের কারণে হোয়াইট আউট অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে জরুরি সাহায্য প্রচেষ্টাও ব্যাহত হয়ে পড়ে।
নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেছেন, শহরের প্রায় প্রতিটি ফায়ার ট্রাক আটকা পড়ে।

ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানিয়েছে, রোববার সকাল ৭টায় বাফেলো নায়াগ্রা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট বরফের পরিমাণ ছিল ৪৩ ইঞ্চি (১০৯ সেন্টিমিটার)।

বাফেলোতে ইয়ারি কাউন্টির নির্বাহী মার্ক পোলোনকার্জ বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলোর একবার হাসপাতালে যেতেই তিন ঘণ্টারও বেশি সময় লাগছে। তুষার ঝড়টি ‘এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়’ হতে পারে।

নিউ ইয়র্ক, ইলিনয় ও মিশিগানে আপাতত গাড়ি নিয়ে বের না হওয়ার নির্দেশনা জারি হয়েছে।

এদিকে তুষার ঝড়ে বিপর্যস্ত কানাডার ওন্টারিও ও কুইবেক। সেখানে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখ গ্রাহক। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় তুষারে পিচ্ছিল রাস্তায় বাস দুর্ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত ও ৫০ জনের মতো আহত হয়।